কেননা ৫৬ হাজার বর্গমাইল ভূমি আর বঙ্গবন্ধু মিলে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের অস্তিত্ব জুড়ে বঙ্গবন্ধু। আবার বঙ্গবন্ধুর সারাটা জীবন জুড়ে সংগ্রাম আর স্বপ্ন ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। একে অপরের সম্পুরক। গোপালগঞ্জের সেই মুজিব হয়ে উঠলেন রাজনীতির এক মহা কবি। এক মহামানব। এক মহান নেতা। সর্বোপরি বাঙালি জাতির পিতা। বাঙালিকে শিখিয়েছেন যিনি অধিকার আদায় করতে। শিখিয়েছেন বাঁচার লড়াইয়ের মন্ত্র। শিখিয়েছেন আত্মনির্ভশীল হতে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু ফিরে আসেন সেই স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়। শূন্য হাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। স্বল্প সময়ে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের স্বীকৃতি আদায়ে করেন। পাশাপাশি ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করেন। এখানে তাঁর বিরল কূটনৈতিক সাফল্যের স্বাক্ষর বহন করে। স্বাধীনতার ৯ মাসের মাথায় দেশবাসীকে দিয়েছেন একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান উপহার। ধর্মকেন্দ্রিক জাতীয়তার বিপরীতে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা প্রতিষ্ঠা ছিল বঙ্গবন্ধুর মহত্তম রাজনৈতিক প্রত্যয়।
স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় চব্বিশ বছর সংগ্রাম করলেও সেই স্বপ্নের বাংলা গড়তে সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্য তাঁকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যা করে। কিন্তু ঘাতকের বন্দুকের নল বাংলাদেশের সঙ্গে এই মহান নেতার যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, তা ছিন্ন করতে পারেনি। যেমন ছিন্ন হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জর্জ ওয়াশিংটনের, ভারতের সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর, চীনের সঙ্গে মাও সেতুংয়ের, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে লেনিনের সম্পর্ক। তাদের নাম যেভাবে জড়িয়ে আছে, বাংলাদেশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামও সেভাবে অবিচ্ছেদ্য সত্তা হয়ে রয়েছে, থাকবে।
আশিকুর রহমান অপু
সেচ্ছাসেবী ও সমাজকর্মী
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply